বৌদ্ধ ধর্মানুভূতিতে আঘাত: এক মুসলমান ভাইয়ের অযৌক্তিক মন্তব্য| Tapan's Blog


ধর্মের সমালোচনা করা যাবেনা এমন কোন কথা নেই। আপনি সমালোচনা করুন, তাতে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু সমালোচকদের সর্বাগ্রে একটা কথা পরিষ্কার মনে রাখা উচিৎ যে, সমালোচনা যাতে যৌক্তিক এবং গ্রহনযোগ্য হয়। এটাও মনে রাখতে হবে যে আপনার আমার কোন অযৌক্তিক সমালোচনার তীরে যাতে কোন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মানুভূতিতে আঘাত না আসে।

এখানে বাঙালী মুসলমান ভাইটি গৌতম বুদ্ধ ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় নীতি নিয়ে যা বলেছেন নিজের ফেইসবুক টাইম লাইনে আসলে তা একজন প্রকৃত যুক্তিবাদীর কোন যৌক্তিক সমালোচনার পর্যায়ে পরেনা। ভাইটি যে নাস্তিক সেটাও না। কারণ, আমি বারবার বলি নাস্তিকরা ধর্মের প্রতিকূলে থাকে ঠিক। কিন্তু নাস্তিকরা থাকে ধর্ম কিংবা কোন বিষয় বস্তু নিয়ে অযৌক্তিক সমালোচনা কিংবা বিদ্রুপ মন্তব্য করার সীমারেখার বাইরে। অযৌক্তিক সমালোচনার স্থান নাস্তিকতাবাদে নেই।

প্রথম ছবিটিতে লক্ষ্য করুন। ভাইটি লিখেছে "বিশ্বব্যাপী Covid-19 সংক্রমণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধ ব্যাপী এক গা ঘেষাঘেষি তাক মাথা ভিক্ষুদের সম্মেলনে ভাষণ প্রদান করছেন বাসর রাতে যৌন কর্মে অক্ষম পলাতক গৌতম বুদ্ধ"!!! এই লেখায় কোন প্রমাণও রেখে যাননি ভাইটি। "বাসর রাতে যৌন কর্মে অক্ষম পলাতক গৌতম বুদ্ধ" এই লেখাটাই আমার কোনভাবে বোধগম্য নয়। এখানে গৌতম বুদ্ধ'কে বিস্তরভাবে হেয় করা হয়েছে। বৌদ্ধ ধর্মানুভূতি আঘাত প্রাপ্ত হয়েছে। যুক্তিবাদী সমালোচকরা সমালোচনা শুরু করে কিছু জানার জন্য, কিছু শিখার জন্য, এই ভাইটি আসলে কোনটাই লক্ষ্যকরে লেখাটি লিখেনি। লিখেছে নিজের উগ্র ধর্মানুভূতি থেকে। শধুমাত্র গৌতম বুদ্ধ এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের হেয় করার জন্য।

উগ্র ধর্মানুভূতির ভাইটিকে একটা কথা বলতে অসম্ভব ইচ্ছে হচ্ছে, সেটি হলো "গৌতম বুদ্ধ যৌন কর্মে অক্ষম ছিলেন" তাহলে নিশ্চয় যৌন কর্মে সক্ষম এবং দক্ষ ছিলেন "আল্লাহ্"। যেহেতু বলা হয়ে থাকে আল্লাহ্ সর্বশক্তিমান, সেহেতু অবশ্যই আল্লাহ্'র যৌন কাজের দিক থেকেও বেশ সর্বশক্তিধর। আর আল্লাহ্'র সেই সর্বশক্তি থেকেই সম্ভবত মুসলমানেরা নারী ও নারী শিশু ধর্ষণের বেলায় অতুলনীয় পাকাপোক্ত। যৌনশক্তির অতিরিক্ত উত্তাপে তাঁরা পাহাড়-সমতল থেকে শুরু করে দেশের সমস্ত জায়গায় যেখানে সেখানে পাহাড়ী-বাঙালী নারী ধর্ষণ করে যত্রতত্র বীর্যপাত ঘটায়। মাদ্রাসাগুলোর প্রসঙ্গ এখানে নাই টানলাম....

ভাইটির কথার কাটিরে কথাটি বললাম। যদি বেশি বলে থাকি বলে মনে হয় সকল সর্বশক্তিমান মুসলমান ভাইদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করছি।

দ্ধিতীয় ছবিটিতে লক্য করুন। ভাইটি লিখেছে "বৌদ্ধ ধর্ম নীতির মূল পঞ্চশীলের একটি হচ্ছে জীবহত্যা মহাপাপ, তারমানে এ গ্রহের কোন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা চিকেন/বিফ খায় না"!!! ভাইটির বুঝা উচিৎ খাদ্য অভ্যাসের সাথে জীবহত্যার কোন সম্পৃক্তটা নেই। জীবহত্যা মহাপাপ এটা নিয়ে এত রহস্যঘন স্ট্যাটাস দেয়ারও কোন দরকার নেই। জীবহত্যা মহাপাপ সেটা কেবল বৌদ্ধ ধর্মীয় বৈশিষ্ঠ্যর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটা পৃথিবীর সকল মানুষের একটা মানবিক গুণাবলীও বলা যায়। পঞ্চশীলে জীবহত্যা মহাপাপ নীতি নিয়ে ভাইটির অবশ্যই সন্দেহ থাকারই কথা। কারণ ইসলাম ধর্মে মুসলমানীদের জীবহত্যা হালাল। যার কারণে তারা প্রত্যক বছর অন্তর অন্তর গরু কোর্বানি করে ধর্মীয় উৎসব পালন করে। পশুদের প্রাণ বিনাশ করে মুসলমানীরা নিজের আনন্দ এবং ধর্মীয় উৎসবের পুঁজি সঞ্চয় করে। অবশ্যই মুসলমানদের আরো একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ঠ্য হলো নিজেদের স্রষ্টা "আল্লাহ্ আকবর" নামের স্লোগান দিয়েই জীবহত্যায় মত্ত থাকে, বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা করে,বুদ্ধ মুর্তি ভাঙে, পাহাড়ীদের উপর নৃসংশ হত্যা চালায়, বাড়ীতে অগ্নিসংযোগ ঘটায়! হিন্দু মন্দিরে হামলা করে, হিন্দু প্রতিমা ভাঙে, হিন্দুদের বাড়ীতে অগ্নিসংযোগ করে! খ্রীস্টানদের গীর্জা ভাঙে!!! সম্ভবত এই দৃষ্টিভঙ্গী থেকেই ভাইটির মনে হলো পঞ্চশীলের "জীবহত্যা মহাপাপ" নীতি ভুল।

যাই হোক, ভাই আমি নিজেও কোন ধর্মের উপর নির্ভরশীল নয়। আমার কাছে মনে হয় সমস্ত ধর্মই ভুলভ্রান্তি এবং বিভেদের উপরে দাড়ানো। কিন্তু তারমানে এটা নয় যে আমি ধর্মকে নিয়ে নিজের মত করে যা ইচ্ছে তাই লিখে অযৌক্তিক প্রমাণহীন মন্তব্য কিংবা সমালোচনা করে যাবো। আমরা আলোচনা-সমালোচনা করবো ঠিকই কিন্তু সেটা হতে হবে অবশ্যই যৌক্তিক এবং গ্রহনযোগ্য। ধর্ম কিংবা কোন বিষয়বস্তু নিয়ে অযৌক্তিক মন্তব্য কিংবা সমালোচনা করে শধু শধু নিজের জ্ঞানহীনতার পরিচয় না দেয়ার অনুরোধ রইলো ভাইটির জন্য।

Comments

Populer Post

ভূ-রাজনীতির ডামাডোলে পাহাড়ে পোশাকি ঐক্যর ফেরিওয়ালারা বেশ সরগরম

পাহাড়ে অভাব,অনতন,বৈষম্য ও করোনা ভাইরাস:একটি প্রাসঙ্গিক ভাবনা| Tapan's Blog

একটি আদিবাসী মায়ের কান্না| Tapan's Blog